মূলভাব
যার সম্পদের প্রাচুর্য আছে সে চায় তার সম্পদের পরিমাণ আরও বাড়াতে। এতে সে নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিতেও কুন্ঠাবোধ করে না।
সম্প্রসারিত ভাব
জগতে বিত্তবানদের অর্থের তৃষ্ণা কখনাে মিটে না। পরের অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েও তাদের অর্থস্পৃহার অবসান হয় না। তাদের যত পাই, তত চাই অবস্থা। তারা সম্পদ বাড়ানাের নেশায় দুর্দমনীয় হয়ে ওঠে। ভালাে-মন্দ, হিত অহিত, সত্য-মিথ্যা, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে কেবলই তারা ধন-সম্পদ আহরণ করতে থাকে। ছলে-বলে-কৌশলে শুধু ঐশ্বর্য ভান্ডার বৃদ্ধি করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে ওঠে। এজন্য দরিদ্রদের বঞ্চিত করতে বা অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ করায়ত্ত করতেও তারা দ্বিধাবােধ করে না। ফলে বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গের সীমাহীন লােভ এবং অন্তহীন চাওয়া-পাওয়ার কাছে অসংখ্য দরিদ্র মানুষকে বঞ্চনার শিকার হতে হয়। পক্ষান্তরে, দীন-দুঃখীদের সম্পদের প্রতি কোনাে মােহ নেই। কষ্টে-সৃষ্টে দুমুঠো সংস্থান হলেই তারা বাঁচে। ধনীর ঐশ্বর্যের প্রতি তারা কখনাে ফিরেও তাকায় না। রাজা-মহারাজাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনও তাদের জানার বাইরে।
কোনােদিন জানারও চেষ্টা করে না। তারপরও বিত্তশালীদের লােভ-লালসার বলি হয়ে তারা সর্বস্বান্ত হয়। তাদের অনৈতিক চাওয়া-পাওয়ার কারণেই বর্তমান বিশ্ব আজ অস্থিতিশীল। শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের ক্রন্দন ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস আজ ভারাক্রান্ত। সামন্তবাদী আর পুঁজিবাদীরা দরিদ্র মানুষদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উপায়ান্তর না দেখে ক্ষেত্রবিশেষে কাঙালিরা আজ রুখে দাঁড়ানাের চেষ্টা করছে। ফলে বিশ্ব যুদ্ধংদেহি ও সংঘাতময় হয়ে ওঠছে। এ যুদ্ধংদেহি বিশ্বের সংঘাতময়তা দূর করার কথা চিন্তা করে বিত্তবানদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন অত্যাবশ্যক, অন্যথায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা কোনােভাবেই সম্ভব নয়।
মন্তব্য
বিত্তবানদের দরিদ্রদের সম্পদ হরণ করার মনােভাব যত তাড়াতাড়ি পরিবর্তন হবে ততই জগতের মঙ্গল হবে। র এতেই বেড়ে উঠবে সুন্দর শান্তিময় সমাজ।